জাতের নামঃ |
বিনাধান-৭ |
জাতের বৈশিষ্ট্যঃ |
উচ্চ ফলনশীল ও উন্নত গুণাগুণ সম্পন্ন রোপা আমন জাত। গাছ খাট ও শক্ত ফলে হেলে পড়ে না। পাতা গাঢ় সবুজ ও চওড়া। আগাম পাকে। জীবনকাল ১১০-১২০ দিন। এ জাতের ধান কেটে সহজে সরিষা, মসুর, গম, গোল আলু ও অন্যান্য রবি ফষর চাষ করা যায়। ধান উজ্জ্বল রংয়ের। ধান ও চাল লম্বা এবং চিকন, খেতে সুস্বাদু। ফলে বাজার মূল্য বেশি এবং রপ্তানীর উপযোগী। এছাড়া চাউলে এ্যামাইলোজের পরিমাণ ২৪-২৫%। |
জমি ও মাটিঃ |
বেলে দো-আঁশ এবং এটেল দো-আঁশ জমি বিনাধান-৭ চাষের উপযোগী। |
জমি তৈরীঃ |
জাতটির চাষাবাদ পদ্ধতি অন্যান্য উফশী রোপা আমন জাতের মতই। |
বপন ও রোপণের সময়ঃ |
খরিফ-২ মৌসুমে অঞ্চলভেদে জুন মাসের শেষ সপ্তাহ হতে মধ্য জুলাই (আষাঢ়ের ২য় সপ্তাহ হতে শেষ সপ্তাহ) পর্যন্ত বীজতলায় বীজ ফেলে ২০-২৫ দিনের চারা জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহ হতে আগষ্ট মাসের শেষ সপ্তাহ অর্থাৎ শ্রাবণের দ্বিতীয় সপ্তাহ হতে ভাদ্র মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত রোপণ করলে ফলন ভালো পাওয়া যায়। |
বীজ হার ঃ |
প্রতি হেক্টর জমি চাষের জন্য ২৫-৩০ কেজি বা এক একর জমির জন্য ১০-১২ কেজি বীজ প্রয়োজন হয়। |
বীজ শোধনঃ |
প্রতি ১০ কেজি বীজে ২০-২৫ গ্রাম ভিটাভ্যাক্স-২০০ বা ব্যাভিস্টিন ব্যবহার করা যেতে পারে। বীজ শোধনের জন্য মাত্রানুযায়ী ছত্রাকনাশক মিশিয়ে একটি বদ্ধ পাত্রে ৪৮ ঘন্টা রাখা আবশ্যক। এছাড়া শোধনের জন্য বীজ ৫২-৫৫ ডিগ্রী সে. তাপমাত্রার পানিতে ১৫ মিনিট ডুবিয়ে রেখে জীবাণুমুক্ত রাখা যায়। |
সার ও প্রয়োগ পদ্ধতিঃ |
প্রতি হেক্টরেঃ ইউরিয়াঃ ১৫০-১৮০ কেজি, টিএসপিঃ ১১০-১২০ কেজি, এমওপিঃ ৫০-৭০ কেজি, জিপসামঃ ৫৫ ও জিংক সালফেট ৫.৫-৬ কেজি । প্রয়োগের নিয়মঃ রোপার জন্য জমি তৈরীর শেষ চাষের আগে সম্পূর্ণ টিএসপি , এমওপি, জিপসাম ও জিংক সালফেট জমিতে সমভাবে ছিটিয়ে চাষের মাধ্যমে মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। ইউরিয়া সারের এক-তৃতীয়াংশ পরিমাণ চারা রোপনের ৭-১০ দিন পর, এক-তৃতীয়াংশ ইউরিয়া পরিমাণ চারা রোপনের ১৫-২০ দিন পর এবং বাকি এক-তৃতীয়াংশ ইউরিয়া পরিমাণ চারা রোপনের ২০-২৫ দিন পর জমির উর্বরতার উপর নির্ভর করে প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া সার প্রয়োগের ২/১ দিন আগে জমির অতিরিক্ত পানি বের করে দিতে হবে এবং প্রয়োজন হলে আগাছা দমন করতে হবে। জমির উর্বরতা ও ফসলের অবস্থার উপর নির্ভর করে ইউরিয়া সার প্রয়োগ মাত্রার তারতম্য করা যেতে পারে। মনে রাখতে হবে টিএসপি ও জিংক সালফেট সার একই সাথে প্রয়োগ করা যাবেনা। তাই এক্ষেত্রে একচাষ পূর্বে টিএসপি প্রয়োগ করতে হবে এবং শেষ চাষের সময় ইউরিয়া ছাড়া অন্যান্য সার ছিটিয়ে প্রয়োগ করা আবশ্যক। |
সেচ ও নিষ্কাশনঃ |
স্বাভাবিক ভাবে আমন মৌসুমে বৃষ্টি নির্ভর অবস্থায় চাষ করা হয়। তবে দীর্ঘ অনাবৃষ্টির সময় ১-২ টি সম্পূরক সেচের প্রয়োজন হতে পারে । |
আগাছা দমন ও মালচিংঃ |
চারা রোপনের পর আগাছা দেখা দিলে নিড়ানী বা হাতের সাহায্যে আগাছা পরিষ্কার এবং মাটি নরম করে মালচিং করতে হবে । |
বালাই ব্যবস্থাপনাঃ |
জমিতে মাজরা পোকা ও পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমন দেখা দিলে ক্লোরানট্রানিলিপ্রোল ও থায়মেনথক্সাম গ্রুপের ভিরতাকো ব্যবহার করা যেতে পারে। এ জাতটি পাতা পোড়া রোগ মধ্যম প্রতিরোধী। রোগবালাই যেমন- খোলপচাঁ দেখা দিলে হেক্সাকোনাজল বা ডাইফেনোকোনাজল গ্রুপের ছত্রাকনাশক প্রতি একরে ২০০ মিলি মাত্রায় প্রয়োগ করা যেতে পারে। এছাড়া ব্লাস্ট রোগ দমনের জন্য ট্রুপার/ নাটিভো/ সেলটিমা একরে ১৬০ গ্রাম মাত্রায় প্রয়োগ করা যেতে পারে। |
হেক্টর প্র্তি ফলনঃ |
উপযুক্ত পরিবেশ ও পরিচর্যায় গড় ফলন ৪.৮ টন/হেক্টর ও সর্বোচ ফলন ৫.৫ টন/হেক্টর । |
প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলুন ধান ফসল বিশেষজ্ঞ |
(সকাল ৯ টা-বিকাল ৫টা) কল করুনঃ +8801710763003 ই-মেইলঃ makazad.pbdbina@yahoo.com দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নাম ও পদবী ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদ পরিচালক (প্রশাসন ও সাপোর্ট সার্ভিস) বিনা, ময়মনসিংহ-2202 |
চিত্র: বিনাধান-৭ এর মাঠ এবং বীজ